শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:১২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
হাসিনার বিচার চেয়ে ট্রাইব্যুনালে মাওলানা সাঈদীর মামলার সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি ভোটাররা একটি সুস্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায় আছেন— কয়ছর আহমদ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন: কয়ছর এম আহমদ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে — কয়ছর এম আহমেদ শিগগিরই সরাসরি দেখা হবে: তারেক রহমান হারুন-বিপ্লবের সাত পদক বাতিল “রক্তের আখরে লেখা জুলাই বিজয় “ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও শহীদদের স্মরণে জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল জগন্নাথপুরে উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন সংগঠনের জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত জগন্নাথপুরে জামাতের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন

এবার চালবাজি

এবার চালবাজি

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক :: হঠাৎ করে অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। চালকল মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে চালের বাজার অস্থির বলে অভিযোগ খুচরা বিক্রেতাদের। আর চালকল মালিকদের দাবি ধানের দাম বৃদ্ধির কারণে বেড়েছে চালের দাম। তবে তাদের এ দাবির পেছনে যৌক্তিকতা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা। ধানের মওসুমে হঠাৎ চালের দাম বাড়ানোর পেছনে সিন্ডিকেটের চালবাজি দেখছেন তারা। এদিকে হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। চালের দাম বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। অতিদ্রুত বাজার মনিটরিং এর মাধ্যমে চালের দাম সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসার দাবি তাদের।
জানা গেছে, গেল সাত দিনে হঠাৎ করে বাজারে প্রায় সব রকম চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ছয় টাকা। এর মধ্যে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় টাকা। বিআর-২৮ চালের দাম পাইকারিতে দুই টাকা আর খুচরা বাজারে বেড়েছে চার থেকে পাঁচ টাকা। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চলতি মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত ৫০ কেজির প্রতি বস্তা মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৯০০ টাকা দরে, বাসমতি ৩ হাজার টাকা, আটাশ ছিল সাড়ে ১৫০০, আর নাজিরশাইল ২ হাজার ৮০০ টাকা। এ কয়দিনে বাজারে চাল সরবরাহে তৈরি হয়নি কোনো সংকট। এরপরও বস্তা হিসেবে প্রায় সব চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা বেশি দরে। বাজারে মিনিকেট আর আটাশের চাহিদা বেশি হওয়ায় এ দুটি চালের দাম বাড়ানো হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

রাজধানীর কাওরান বাজারের খুচরা বাজারে মিনিকেট ৫০ টাকা, আটাশ ৪০ টাকা ও নাজির ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৪৫ টাকা, ৩৫ টাকা ও ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মায়ের দোয়া স্টোরের কর্মচারী বাবলু বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে সব ধরনের চালের দাম ৫ টাকা বেড়েছে।
বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা রোকন জানান, ধান ও চালের আগাম দাম নির্ধারণের সঙ্গে সঙ্গেই ধানের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ইচ্ছেমতো চালের দাম বাড়াচ্ছেন চালকল মালিকরা।

এদিকে হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। অতিদ্রুত বাজার মনিটরিং এর মাধ্যমে চালের বাজার সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসার দাবি তাদের। চালের ক্রেতা রিকশাচালক আলম হোসেন জানান, কিভাবে বাচঁব, চাল আর পিয়াজ কিনতে গেলেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই দুইটাই প্রয়োজনমতো কিনতে পারছি না, অন্যকিছু কিভাবে কিনব। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর। এই মোকাম থেকেই ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন কয়েকশ ট্রাক চাউল সরবরাহ করা হয়। কুষ্টিয়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের কোনও সিন্ডিকেট নেই। খুচরা বাজারে যে হারে চাউলের দাম বেড়েছে সেই হারে দাম বাড়েনি খাজানগর চাউলের মোকামে। এটা খুচরা ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছে। তারা ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছে। লিয়াকত রাইচ মিল এর স্বত্বাধিকারী মো. লিয়াকত আলী বলেন, হঠাৎ করে ধানের দাম বৃদ্ধির কারণে চালের বাজার কিছুটা বেড়েছে।

রাজধানীর চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলের ধান-চালের সবচেয়ে বড় মোকাম নওগাঁয় এক সপ্তাহের ব্যবধানে চিকন চালের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা। আর বস্তা প্রতি (৫০ কেজি) বেড়েছে প্রায় ২০০ টাকা। ২৮ জাতের ধানের সরবরাহ কমায় চালের দাম বেড়েছে। মোকাম থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। দাম বেড়েছে আটা-ময়দারও। রাজশাহী ট্রেডার্সের মালিক মো. মোক্তার হোসেন জানান, ময়দার দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। মেসার্স হাজী ইসমাইল এন্ড সন্সের মালিক জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা এতদিন ২০০০ থেকে ২০৫০ টাকা বস্তাতে চাল বিক্রি করেছি। যে চাল কিনেছি তা বিক্রি করতে হবে ২১০০ থেকে ২২০০ টাকায়। মিনিকেট এখন ২১০০ থেকে ২২০০ টাকা বস্তাতেও বিক্রি হচ্ছে। আটাশ ১৫০০ থেকে ১৫৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ১৬০০ টাকা বস্তা। তিনি বলেন, নতুন চালানের চালের দাম আরো বাড়বে। এই আড়তদারের অভিযোগ মিলাররা চালের অর্ডার নিচ্ছে না। তাই সরবরাহ না বাড়ায় দাম বাড়াতে হচ্ছে। আড়তদারসূত্র জানায়, অতি মুনাফা লুটতে মিল মালিক সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়েছে। সময়ে সময়ে তারা এমনটি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এর আগেও এভাবে চালের দাম বাড়ানো হয় বিভিন্ন সময়ে। এভাবে দাম বাড়ানোয় অভিযানও চালানো হয় মোকামে। কিন্তু এই সিন্ডিকেট তাদের কৌশল পরিবর্তন করেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com